FavoriteStudy

(২০২১) কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

Table of Contents

সৃজনশীল -১

সৃজনশীল ১

উত্তরঃ

ক. বুধা প্রায়ই কাকতাড়ুয়া সাজত।

খ. ‘আধা-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে ওর চোখ লাল হতে থাকে।” কারণ সেদিকে তাকিয়ে হানাদার বাহিনীর প্রতি বুধার ক্ষোভ ও প্রতিশোধস্পৃহা বাড়তে থাকে। অন্যায় কিছু দেখলেই বুধার খুব রাগ হয়। আর রাগ হলে তার চোখ লাল হতে থাকে।

হানাদাররা হঠাৎ করে একদিন বুধাদের গ্রামে এলো। বাজারের অনেক মানুষকে গুলি করে মারলো। অবশেষে আগুন দিয়ে বাজারটা পুড়িয়ে দিল। তারা যাওয়ার পরে গ্রামের মানুষেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলো। বুধা নিজেও মাটির হাড়িতে করে ডোবা থেকে পানি নিয়ে আসে। পাকিস্তানি হানাদারদের প্রতি ওর রাগ বাড়তে থাকে। ও মনে মনে ফুঁসতে থাকে। প্রতিশোধ নেয়ার কথা ওর মনের ভেতর ঢুপকঢাপ শব্দ তোলে। এক সময় আগুন নিভে গেলে আধা-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে ওর চোখ লাল হতে থাকে।

 

গ. কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে বুধা অত্যন্ত কৌশলী কিশোর। তার এ চরিত্রের সাথে উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদারের সাদৃশ্য রয়েছে। শক্তি দিয়ে সবকিছু হয় না।

পৃথিবীতে শক্তির চেয়ে বুদ্ধির মূল্য অনেক বেশি। শক্তি দিয়ে যে কাজ সাধন করা অসম্ভব, বুদ্ধি দিয়ে সে কাজ করা খুবই সহজ। বুদ্ধিমত্তার কারণেই মানুষ পৃথিবীর সেরা জীব। যারা বোকা, তারা শক্তি দিয়ে সব কাজ সাধনের চেষ্টা করে।

উদ্দীপকে কলিমদ্দি দফাদারের বুদ্ধিমত্তার প্রমাণ পাওয়া ঘায়। পাকসেনার থানায় ঘাটি স্থাপন করে। ফলে এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। সবাই পালাতে শুরু করে। তখন কলিমদ্দি দফাদার ভিন্ন পরিকল্পনা করেন। পাক হানাদারদের বুঝতে না দিয়ে তিনি তাদের দলের লোক হিসেবে অভিনয় করেন। এমন ভাব করেন, যেন মনে হয় তিনি রাজাকার দলে যোগ দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, গোপনে তিনি যোগাযোগ রাখেন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে। একদিন তিনি মিলিটারিদের ভাঙা পুলের সামনে নিয়ে আসেন। পুলে উঠে তিনি পানিতে ঝাঁপ দেন। আর সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে পাকবাহিনী ধ্বংস হয়ে ঘায়। কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসেও এমন কৌশল লক্ষ্য করা যায় বুধার চরিত্রে। বুধা শ্রমিকদের সঙ্গে বাঙ্কার বানাতে যায়। বাঙ্কার তৈরি করা মানে হানাদারদের শক্তি বেড়ে যাওয়া। বুধা সবার শাহাবুদ্দিনের কথা মত সে বাঙ্কারের তলায় মাইন পুঁতে দিয়ে আসে। হানাদার বাঙ্কারে ঢুকে মাইনে পা দিতেই সব ধ্বংস হয়ে ঘায়। এভাবেই উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদারের সাথে বুধার চরিত্রের মিল পাওয়া যায়।

 

ঘ. না, উদ্দীপকটি “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না। কারণ উদ্দীপকের দিকটিই কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের একমাত্র দিক নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এদেশের বুকে তা-ব চালিয়েছিল, অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিল। তারা ভেবেছিল ংলার মানুষ ভিতু। অন্দ্রের মুখে এরা পিছু হটবে। বাঙালী তাদের চিন্তাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিল। বাঙালিরা মহা প্রতিরোধ গড়ে তোলে হানাদারের বিরুদ্ধে। অবশেষে ত্রিশ লক্ষ্য প্রাণের বিনিময়ে অজিত হয় কাঙ্খিত স্বাধীনাতা। দেশপ্রেম। পাকসেনার থানায় ঘাটি স্থাপন করে। ফলে এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। সবাই পালাতে শুরু করে। তখন কলিমদ্দি দফাদার ভিন্ন পরিকল্পনা করেন। পাক হানাদারদের বুঝতে না দিয়ে তিনি তাদের দলের লোক হিসেবে অভিনয় করেন।

এমন ভাব করেন, যেন মনে হয় তিনি রাজাকার দলে যোগ দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, গোপনে তিনি যোগাযোগ রাখেন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে। একদিন তিনি মিলিটারিদের ভাঙা পুলের সামনে নিয়ে আসেন। পুলে উঠে তিনি পানিতে ঝাঁপ দেন। আর সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে পাকবাহিনী ধংস হয়ে যায়। “কাকতাড়ুয়া উপন্যাসেও এমন চরিত্রের খোঁজ পাওয়া ঘায়। সেই চরিত্রটির নাম হচ্ছে বুধা। সে পাগলের মত আচরণ করে, যাতে কেউ তাকে সন্দেহ করতে না পারে। সে রাজাকার কমান্ডার আর চেয়ারম্যানের বাড়িতে আগুন লাগায়। হানাদারদের খবর সংগ্রহ করে, কাজের সুযোগে বাঙ্কারে মাইন পুতে পাকিস্তানি সৈন্য হত্যা করে। কাকতাড়ুয়া উপন্যাসে বুধার পেয়েছে। রাজাকারদের তা-বে মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠে। হানাদাররা বুধার গ্রামে ঢুকে হত্যাযজ্ঞ চালায়। জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পরে গ্রাম। অসংখ্য মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এছাড়াও বুধার প্রতি মানুষের ভীষণ ভালোবাসা ও বুধার কর্মঠ জীবন “কাকতাড়ুয়া, উপন্যাসে ফুটে উঠেছে যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না।

 

 

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : এই মার্চের ভাষণ শুনে গর্জে ওঠে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র সাঈদ। ঝাঁপিয়ে গড়ে মুক্তিযুদ্ধে। তার নেতৃত্বে একের পর এক গেরিলা আক্রমণে অতিষ্ঠ পাকসেনারা। অপারেশন গ্রামে আন্রমণ করে। বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়। আর যাকে যেখানে পেয়েছে, তাকেই সেখানেই নির্মমভাবে হত্যা করে। এক সময় আবু সাঈদ জানতে পারে স্বজন হারানোর খবর। কিন্তু সে আপসহীন। তার একটাই প্রতিজ্ঞা, এ দেশের মাটি থেকে ওদের তাড়াতেই হবে।

ক. কে বুধাকে ‘মানিকরতন” বলে ডাকতেন?

খ. এবার মৃত্যুর উৎপাত শুরু করেছে ভিন্ন রকমের মানুষ” – এ কথা বলার কারণ কি?

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কাহিনী “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের ঘে বিশেষ দিকটির ইঙ্গিত করে তা ব্যাখ্যা কর।

. উদ্দীপকের আবু সাঈদের মনোভাবই যেন “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের মূল বক্তব্য।” যুক্তিসহ প্রমাণ কর।

উত্তর :2 

ক. হরিকাকু বুধাকে “মানিকরতন” বলে ভাকতেন।

খ. এবার মৃত্যুর উৎপাত শুরু করেছে ভিন্ন রকমের মানুষ।” “কাকতাড়ুয়া, উপন্যাসে এ কথাটি বলেছে বুধা, পাকিস্তানি সেনাদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ প্রসঙ্গে। “কাকতাড়ুয়া উপন্যাসে বুধার মাধ্যমে কিশোর মানসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তুলে ধরা হয়েছে। কিশোর বুধার মাতৃভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসার দিকটি এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। গ্রামে কলেরার আক্রমণে বুধার মা-বাবা, ভাইবোন সবাই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। সে সময় যে মৃত্যু বুধা দেখেছিল, তা ঘটেছিল একটি বিশেষ রোগের কারণে। আর যুদ্ধের সময়ে এখন যে মৃত্যু বুধা দেখছে তা ভিন্ন রকম মানুষের নির্মমতায় শুরু হয়েছে। বুধার চিরচেনা পথ ধরে গুলি ছুড়তে ছুড়তে জিপে করে পাকিস্তানী সেনারা তার গ্রামে প্রবেশ করে। বাজারে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে। তাদের নৃশংসতা ও হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা প্রসঙ্গে বুধা এ মন্তব্যটি করে।


আরও পড়ুন ঃ অ্যালোভেরা জেল এর সকল ব্যাবহার অ্যালোভেরা


গ. উদ্দীপকের কাহিনী “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের বুধার অমিত সাহস ও স্বদেশপ্রেমের দিকটি ইঙ্গিত করে। মাতৃভূমির প্রতি মানুষের ভালোবাসা থাকে। অনেক সময় সেই ভালোবাসা সাধারণ্যে প্রকাশ পায় না। দেশ যখন শত্রু “কবলিত হয়। আর তা প্রকাশ পায় বৈশাখি ঝড়ের মত। ১৯১ সালে পাকিস্তানি হানাদারের সামনেও বাঙালি এমনই ঝড়ের মত ঝাপিয়ে পড়েছিল। দেশকে শত্র“মুক্ত করেছিল প্রবল বীব্রমে। পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এঁতিহাসিক এই মারের ভাষণ শুনে তার মনে দেশকে শন্রু “মুক্ত ও স্বাধীন করার বাসনা জাগে। সেই লক্ষ্যে সে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। একের পর এক নেতৃত্ব দেয় গেরিলা আন্রমণের। সফলভাবে শেষ করে অপারেশন জ্যাকপট। পাকসেনারা আবু সাঈদের গ্রামে হামলা চালায়। বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়।

আর যাকে যেখানে পেয়েছে, তাকেই সেখানেই নির্মমভাবে হত্যা করে। তাদের এত অত্যাচারেও সে থামে না। বরং শপথ করে দেশকে শক্রু “মুক্ত করার। এ রকমের মানসিকতা “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের বুধার মধ্যেও পাওয়া যায়। বুধা কিশোর। কেউ তাকে মুক্তিযোদ্ধ মনে করে না। এ সুযোগ সে পুরোপুরি কাজে লাগায়। রাজাকার কমান্ডার আর শান্তি কমিটির চেয়্যারম্যানের বাড়িতে সে আগুন দেয়। মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেয় শত্র“র বাঙ্কার। দেশকে শত্র“মুক্ত করার প্রতিজ্ঞা তার মনেও কাজ করে। এভাবেই উদ্দীপকের সাইদের মুক্তিযুদ্ধের কার্যন্রম “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের বুধার দেশপ্রেমের দিকটি ইঙ্গিত করে।

ঘ. “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে বুধার মাধ্যমে কিশোর মানসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তুলে ধরা হয়েছে। যা উদ্দীপকের আবু সাঈদের মানসিকতায়ও পাওয়া যায়। ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের আদেশে হানাদার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। তারা বাংলার বুকে চালায় তাণুব। নির্বিচারে হত্যা করে অসংখ্য মানুষ। মা-বোনের দেয়। বাংলার মানুষ মুখ বুজে এ অন্যায় অত্যাচার সহ্য করেনি। যুদ্ধের মাধ্যমে এর উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। হানাদার পরাজিত করে অর্জন করেছে কাঙ্খিত স্বাধীনতা। উদ্দীপকে আবু সাঈদের সাহসিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাঈদ কলেজে পড়ে। সে দেশকে শক্ত “মুক্ত করার শপথ নেয়।

সেই লক্ষ্যে সে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। একের পর এক নেতৃত্ব দেয় গেরিলা আক্রমণের। সফলভাবে শেষ করে অপারেশন জ্যাকপট। পাকসেনারা আবু সাঈদের গ্রামে হামলা চালায়। বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়। আর যাকে যেখানে পেয়েছে, তাকেই সেখানেই নির্মমভাবে হত্যা করে। এক পর্যায়ে সে স্বজন হারানোর সংবাদ পায়। কিন্তু সে দমে যায় না। “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে বুধাও সমান সাহসিকতার পরিচয় বহন করে। সে অনাথ কিশোর। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে কৌশলে যুদ্ধে অংশগ্রহণ । সবাই ভাবে বুধা পাগল। কিন্তু বুধা আসলে দেশের জন্য জীবন বাজি রাখতে সদা প্রস্তুত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে মূল বক্তব্য হল কিশোর মানসিকতায় দেশপ্রেম ও ত্যাগী মনোভাব। বুধা জীবনের প্রতি টান প্রায় হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্ত মুক্তিযুদ্ধের কারণে তার ভেতর আবার জীবনবোধ জেগে ওঠে। দেশকে শন্রু “মুক্ত করার দারুণ নেশা তার মধ্যে প্রবল হয়ে ওঠে। প্রাণের মায়া ত্যাগ করে বারবার শত্রুর সাথে মরণখেলায় মেতে ওঠে। এই দেশত্মবোধই “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে মূল বিষয়। উদ্দীপকের আবু সাঈদের চরিত্রেও এই একই বিষয় প্রকটিত।

সৃজনশীল-

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ :

ক. শান্তি কমিটির চেয়্যারম্যান কে ছিল?

খ. যে মানুষের দৃষ্টিতে ভাষা নেই, বুধার মতে সে মানুষ কেন মানুষ নয়?

গ. উদ্দীপকের হাসেম ব্যাপারীর সাথে “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে বর্ণিত আহাদ মুন্সির চরিত্রেরে সাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের বর্ণিত দিকটিই “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের একমাত্র দিক নয় _ যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখ।

 উত্তরঃ

ক. শান্তি কমিটির চেয়্যারম্যান ছিল আহাদ মুন্সি।

খ. যে মানুষের দৃষ্টিতে ভাষা নেই, সে মানুষকে বুধার মানুষ মনে না করার কারণ, বুধা প্রাণহীন মানুষকে মানুষই মনে করে না। কারণ, তারা দেশের শব্রু। বুধা পেয়ারা নিয়ে মিলিটারি ক্যাম্পে যায় তথ্য সংগ্রহ করতে। মিলিটারির খুব কাছাকাছি গেলেও তার ভয় লাগে না। অথচ এসব মিলিটারিই অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছে। বুধা মিলিটারির দিকে তাকিয়ে ছিল। কোন ভাষা নেই সে দৃষ্টিতে। সাধারণত প্রাণহীন দৃষ্টি হিংত্র হয়, এই হিংস্রতা বুধা দেখেছে। যে মানুষের দৃষ্টিতে ভাষা নেই, সে মানুষকে বুধার মানুষ মনে করে না।

গ. কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে আহাদ মুন্সি একটি দালাল ও নিষ্ঠুর চরিত্র এবং উদ্দীপকের হাসেম ব্যাপারীও এ দালালী ও নিষ্ঠুরতায় বিশ্বাসী। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের মানুষের ওপর তীব্র নির্মমতা চালায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। তখন হানাদারদের সঙ্গে যোগ দেয় এদেশেরই কিছু স্বার্থপর লোক। তারা সম্পদ লুগ্ঠন করে, নারীদের জোড় করে হানাদারদের হাতে তুলে দেয়; তখন হেন অপরাধ নেই, যা তারা করেনি। উদ্দীপকে মফিজ খাঁর চরিতেও এমন নিষ্ঠুরতার পরিচয় পাওয়া যায়। জমিদার হওয়ার কারণে সে সাধারণ প্রজাদের ওপর অত্যাচার চালায়। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে হাসেম ব্যাপারী। জমিদারের কাছের লোক হওয়ায় সে মানুষের ওপর পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে আসে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে গ্রামছাড়া করে। “কাকতাড়ুয়া উপন্যাসে আহাদ মুন্সিও বর্বর হানাদারদের সহযোগী। হানাদারদের দোসর হয়ে সে গ্রামের লোকজনের ওপর নির্যাতন চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে নানা তথ্য সরবারহ করে সে হানাদারদের সাহায্য করে। গ্রামের মানুষদের জোড় করে সেনাদের বাঙ্কার নির্মাণ করতে নিয়ে যায়। তার আদেশেই বুধাকে জোড় করে কাকতাড়ুয়া বানিয়ে রাখা হয় ও মাঠের মাঝখানে। আহাদ মুন্সির এ ধরনের অন্যায় অত্যাচারের সাথে উদ্দীপকের হাসেম ব্যাপারীর চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে।

 

ঘ. উদ্দীপকের দিকটিই “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের একমাত্র দিক নয়- মন্তব্যটি যথার্থ। ১৯৪৭-১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানী শাষকগোষ্ঠি নানাভাবে পূর্ব ংলার মানুষের শোষণ করে। বাঙালি এর প্রতিবাদ জানালে শুরু হয় নানা অত্যচার ও বর্বরতা। তারা গণহত্যায় মেতে ওঠে। সমস্ত দেশ ল-ভ- করে দিতে শুরু করে। বাঙালি এক সময় জেগে ওঠে। শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। বাঙালির সাহস ও শক্তির কাছে অবশেষে হার মেনে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। ব্যাপারী। সে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালায়। মানুষ তার ভয়ে কাপত। কারণ সে কারও পুকুরের মাছ, কারও গোয়ালের গরু আবার কারও ঘরের টিন পর্যন্ত খুলে নিয়ে যেত।

“কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে এমন চরিত্রধারী হল আহাদ মুন্সি। সে হানাদারদের দোসর। এ সুযোগে সে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার ও নিগীড়ন চালায়। গ্রামের মানুষকে ভয় দেখিয়ে সে হানাদারদের কাজ করতে বাধ্য করায়। বাঙ্কার খোড়ার জন্য সে মানুষদের ধরে নিয়ে যায়। “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে আহাদ মুন্সির চরিত্রই মূল বিষয় নয়; মুল বিষয় হল কিশোর বুধার চেতনায় দেশপ্রেম ও সাহসী রূপ। কারণ সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নানা কৌশলে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও বুধার একাকী জীবন, কলেরার প্রকোপ, দারিদ্রের টানাপোড়ন, হানাদারদের পৈশাচিকতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস ও সাফল্য ইত্যাদি দিকগুলো “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসে প্রকাশ পেয়েছে। এসব দিক উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের দিকটিই “কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের একমাত্র দিক নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button