বাংলা প্রথম পত্র
মমতাদি : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : রাসেল ড্রাইভার হিসেবে যেমন দক্ষ তেমনি সৎ। প্রকৌশলী এমারত সাহেব তাকে ব্যক্তিগত ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেন। ইফতি, সনাম ও শিলাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসাই তার প্রধান কাজ। ঘরের সবাই ওকে ভীষণ ভালোবাসে। ইফতিরা ওকে ভাইয়া বলে ডাকে, একসাথে খায়, গল্প করে, বেড়াতে যায়। রাসেলের প্রতি সন্তানদের এই আচরণে এমারত সাহেব ভীষণ খুশি।
ক. মমতাদির বয়স কত ছিল?
খ. মমতাদির চোখ সজল হয়ে উঠেছিল কেন?
গ. উদ্দীপকে রাসেলের মাঝে বিদ্যমান মমতাদির বিশেষ গুণটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাসেল ও মমতাদির প্রতি দুই পরিবারের আচরণের ফুটে ওঠা দিকটি সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে কতটুকু প্রভাব ফেলে? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
আরো পড়ুনঃ মমতাদি গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তরউত্তর
ক. মমতাদির বয়স ২৩ বছর ছিল।
খ। আচরণের দিকটি গুরুত্ব পেয়েছে। স্বামীর চাকরি না থাকায় মমতাদির সংষারে দারুণ অভাব নেমে আসে।
সংসারের কথা ভেবে, আত্মসম্মানের দিক বিবেচনা না করে অণ্যের বাড়িতে গৃহপরিচালিকার কাজ নিতে চায় মমতাদি। ফলে অনভিজ্ঞতার কারণে রান্নার কাজের লোকের মাসিক মাইনে সম্পর্কে তার ধারনঅ ছিল না। সে আশা করেছিল তাকে বোধহয় “বারো” টাকা মাইনে দেওয়া হবে। কথাবার্তা শেষে গৃহকর্রী তার মাসিক মাইনে ঠিক করেন পনেরো টাকা। প্রত্যাশার চেয়ে অতিরিক্ত চোখ সজল হয়ে উঠেছিল।
গ. উদ্দীপকে রাসেলের মাঝে বিদ্যমান মমতাদির বিশেষ গুনটি হলো সততা। সততা মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ। যাবতীয় সদগুণই এর অন্তর্গত।
সব সময় সত্য কথঅ বলা, সত্য প্রকাশ করা, মিথ্যার আশ্রয় না নেওয়াকে সততা বলা হয়। সত্য থেকে দূরে গিয়ে কেউ জীবনে প্রকৃত উন্নতি করতে পারেনি। বরং সত্যকে আঁকড়ে ধরেই জীবনে সাফল্যের পথে এগিয়ে গেছে মানুষ। আর সৎ চরিত্রবলেই মানুষ জগতে অবিনশ্বর কীতি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। উদ্দীপকে গাড়িচালক রাসেলের সততা ও দক্ষতার কথা বলা হয়েছে।
রাসেল প্রকৌশলী এমারত সাহেবের ব্যক্তিগত গাড়িচালক। এর বাইরে তার অন্য একটি পরিচয়- সে পেশাগত দক্ষতাসম্পন্ন একজন ভালো মানুষ। তার সততায় মুগ্ধ এমারত সাহেবের পরিবারের লোকজন। তাই তার ছেলেমেয়েরা রাসেলকে ‘ভাইয়া” বলে ভাকে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি “মমতাদি’ গল্পের মমতাদির সঙ্গে সাদৃশ্যপুর্ণ। কারণ মমতাদির আচার-আচরণ এবং সততায় মুগ্ধ হয়ে গৃহকর্থী তাকে শ্লেহভোরে বেঁধে নিয়েছেন। স্কুলপড়ুয়া ছেলেটির প্রতি মমতাদির গভীর শ্লেহও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কাজের প্রতি মনোযোগ এবং অত্যন্ত নিপুণভাবে প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে মমতাদি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
ঘ. রাসেল ও মমতাদির প্রতি দুই পরিবারের আচরণে ফুটে ওঠা দিকটি সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। গৃহকর্মী।
গৃহকর্মী হলেও তারা আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। তারাও গৃহকর্তা বা গৃহকত্রীর কাছ থেকে শ্লেহ-মমতা, ভালোবাসা, সর্বোপরি ভালো আচরণ আশা করে। তবে অনেকে তা পায়, আবার অনেকে তা পায় না। উদ্দীপকে গাড়িচালক রাসেলের কর্মদক্ষতা ও সততার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। প্রকৌশলী এমারত সাহেবের পরিবারের বলে সম্বোধন করে। সে তার আচরণ ও সততা দিয়ে বাড়ির সবার মন জয় করে তাদের পরিবারের একজন হয়ে উঠেছে। “মমতাদি” গল্পেও মমতাদির কর্মদক্ষতা, সততা ও গৃহকন্রীর সঙ্গে তার গভীর শ্রদ্ধাবোধের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে। সেখানেও সবাই তাকে পছন্দ করে।
গৃহকন্রীও মমতাদিকে সন্তানের শ্লেহভোরে বেঁধে নিয়েছেন। উদ্দীপকের রাসেল এবং “মমতাদি” গল্পের মমতাদির প্রতি বাড়ির মালিক ও গ্ৃকত্রীর ব্যভহার অত্যন্ত মানবিক। এই মানবিকতা তারা উভয়েই তাদের কর্মদক্ষতা ও সততা দিয়ে অর্জন করেছে। তারা উভয়েই তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সততার সঙ্গে পালন করেছে, যা সামাজিক সংহতি ও উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কেননা মালিক-ভৃত্যের মধ্যে শ্রদ্ধা ও নিয়ামক।
আরো পড়ুনঃ মমতাদি গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর